জাতীয়

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্বে রোল মডেল: শেখ হাসিনা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০১৯, ১৯:১২

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্বে রোল মডেল: শেখ হাসিনা

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিশ্বে রোল মডেল আখ্যায়িত করে আগামীতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেছেন, ‘এই সব বহুমুখী এবং বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সম্মুখে সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্তরূপে পরিগণিত হচ্ছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ভবিষ্যতেও এ সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।’

সোমবার (১১ মার্চ) বিকেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে প্রদত্ত ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা গণভবন থেকে এবং নরেন্দ্র মোদী নয়া দিল্লীতে তাঁর কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগদান করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত এক দশকে উভয় দেশের মধ্যে বিভিন্ন প্রথাগত খাত যেমন নিরাপত্তা, বাণিজ্য, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু ও পরিবেশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, জনযোগাযোগ বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য প্রভৃতি খাতে সহযোগিতা প্রভূত পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন ও অপ্রচলিত খাত যেমন ব্লু ইকোনমি এবং মেরিটাইম, পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা, ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ রপ্তানি এবং সাইবার সিকিউরিটি প্রভৃতি খাতে উভয় দেশ সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করেছে।’

প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- ভারত থেকে দোতলা বাস, একতলা এসি ও নন-এসি বাস এবং ট্রাক আমদানি, ভারতীয় আর্থিক অনুদানে পাঁচ জেলায় (জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া) ৩৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, ভারতীয় অনুদানে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় ১১টি পানি শোধনাগার স্থাপন এবং সার্কভুক্ত দেশসমূহে ভারতের ন্যাশনাল নলেজ নেটওয়ার্ক (এনকেএন) সম্প্রসারণের আওতায় বাংলাদেশে উক্ত নেটয়ার্কের সম্প্রসারণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন।

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ উচ্ছেদে জিরো টলারেন্স নীতির কথা উল্লেখ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের প্রতি শূন্য সহনশীলতার নীতি পোষণ করে এবং কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে কখনই বাংলাদেশের মাটিতে আশ্রয় প্রদান করা হবে না।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/11/1552309907297.jpg

প্রধানমন্ত্রী এ সময় গত মাসে কাশ্মিরের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ভূয়শী প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নতি ভারতের জন্য সবসময়ই একটি আনন্দের বিষয়তো রয়েছেই, উপরন্তু আমাদের জন্য প্রেরণারও উৎস।’

ভারত-বাংলাদেশ সহযোগিতার প্রসঙ্গ টেনে মোদী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য বিশাল লক্ষ্য স্থির করেছেন। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে গড়ে তোলা এবং ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলায় তাঁর রূপকল্পকে বাস্তব রূপ দিতে সহায়তা করা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।’

তিনি বলেন, ‘আমার পুরো বিশ্বাস রয়েছে বিগত ৫ বছর আমাদের জন্য যতটা গৌরবজনক ছিল তার চাইতে আগামী ৫ বছরে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এর থেকেও অনেক উচ্চতায় আসীন হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং ড. মশিউর রহমান, এলজিআরডি এবং সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে সফররত সংসদ সদস্যদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এ সময় নয়া দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্বে রোল মডেল: শেখ হাসিনা | সময় নিউজ