জাতীয়

অর্থনৈতিক মুক্তিতেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব: প্রধান বিচারপতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম

প্রকাশ: ৮ মার্চ ২০১৯, ১৩:৪২

অর্থনৈতিক মুক্তিতেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব: প্রধান বিচারপতি

সাধারণ সভায় বক্তব্য দেন প্রধান বিচারিপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন / ছবি: বার্তা২৪

সামাজিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব বলে মনে করেন প্রধান বিচারিপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেছেন, ‘জনজীবনের সর্বস্তরে নারী পুরুষের সমতা নিশ্চিত করণের বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। দেশের সর্বোচ্চ আদালত হিসেবে সুপ্রিমকোর্ট সবসময়ই নারী পুরুষের সমতা ও জনজীবনের সর্বস্তরে নারীর সম অংশগ্রহণের নীতিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করে।’

শুক্রবার (৮ মার্চ) রাজধানীর বিচার প্রসাশন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ মহিলা জজ অ্যাসোসিয়েশনের ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নারীর সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে যথাপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’

বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর প্রভূত উন্নতি সাধিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে নারীর সাফল্য ও অগ্রগতি ইতিবাচক। পোশাক শিল্পে নারীদের ভূমিকা সকল মহলে প্রশংসিত। এই শিল্প থেকে বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগ অর্জন করা হচ্ছে।’

নারী অধিকার রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে মন্তব্য করে সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘অধিকাংশ নারী বিচারক তাদের দায়িত্ব পালনে যথেষ্ঠ দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Mar/08/1552030805321.jpg

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘সংবিধানে নারী অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল প্রকার কর্মে ও পেশায় সমতা বিধানের কথা সন্নিবেশ করা আছে। ১৯৭৪ সালে প্রথম বিচারবিভাগে নারী বিচারক নিয়োগের বাধা বিলুপ্ত করা হয়। শুরু হয় অধস্তন আদালতে নারী বিচারকদের পথচলা। সরকার ২০০১ সালে হাইকোর্টে এবং ২০১১ সালে আপিল বিভাগে সর্বপ্রথম নারী বিচারপতি নিয়োগ দেয়। তাছাড়া ২০১১ সালের সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশগ্রহণের সমতা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণেই বিচার বিভাগে নারীদের অংশগ্রহণ অন্যান্য পেশার মতোই লক্ষণীয় হয়ে উঠেছে। সর্বশেষ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার মাধ্যমে ৫৩ জন নারী বিচার বিভাগে যোগদানের পর বর্তমানে মোট বিচারকের প্রায় সাড়ে ২৭ শতাংশই নারী বিচারক রয়েছেন। এই সংখ্যা ইউরোপ, আমেরিকা বা আমাদের প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বেশি।’

বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে কিভাবে হয়রানিমূলক মামলা কমিয়ে স্বল্প ব্যায়ে ও সময়ে মানুষকে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা যায় তা খেয়াল রাখতে বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানান আইনমন্ত্রী।

শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য এবং সিনিয়র জেলা জজ তানজীনা ইসমাইলের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, আপিল বিভাগের বিচারপতি জিনাত আরা, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ এবং বিচারপতি ফাতেমা নজীব। এছাড়া সভায় দেশের বিভিন্ন আদালতে কর্মরত নারী বিচারকরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থনৈতিক মুক্তিতেই নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব: প্রধান বিচারপতি | সময় নিউজ