নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা চলচ্চিত্র
মুজিব: একটি জাতির রূপকার
প্রকাশিত :
১৩ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫১:২১
আপডেট :
১৩ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫৪:২৫
মশাল আজাদ: আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখেই মূলত আওয়ামী লীগ 'মুজিব: একটি জাতির রূপকার' চলচ্চিত্র মুক্তি দিয়েছে। এই চলচ্চিত্রটিকে মূলত প্রোপাগাণ্ডা হিসেবেই ব্যবহার করবে আওয়ামী লীগ। এরইমধ্যে চলচ্চিত্রটিকে কেন্দ্র করে 'মিডিয়া ট্রায়াল' চলছে। মূলত নির্বাচনের আগে মানুষের আবেগ নিয়ে খেলার জন্যই এ ধরনের চলচ্চিত্র উপমহাদেশে মুক্তি দেয়া হয়।
ভারতে গত নির্বাচনের আগে মোদির বায়োপিক মুক্তি দিয়ে এমন প্রোপাগাণ্ডা চালানো হয়েছিল। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে উপমহাদেশের মানুষের মনের উপর প্রভাব বিস্তার করা বেশ পুরাতন কৌশল। যে কৌশোলকে এবার খুব ভালোভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে খাঁদের কিনারায় চলে আসা আওয়ামী লীগ।
এই মুহুর্তে দেশে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। আর তাই মানুষের কাছ থেকে সহানুভুতি পেতেই ইতিহাস বিকৃত করে আবেগ নির্ভর একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে। এই চলচ্চিত্রে অনেক ঐতিহাসিক তথ্যকে যেমন লুকানো হয়েছে তেমনি গোপন করা হয়েছে অনেক মুজিবের নেগেটিভ দিকও। যদিও প্রোপাগাণ্ডা চলচ্চিত্রগুলো সাধারণত মিথ্যার উপরই বেশিরভাগ সময় নির্মিত হয়।
এই ছবিটির সমালোচনা করেছেন অনেকেই। লেখক, গবেষক, সাংবাদিকরা বলেছেন যে, এই ছবিতে বহু ঐতিহাসিক ঘটনাকে বিকৃত করা হয়েছে। যেমন, ছবিটিতে দেখানো হয়েছে যে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে তিনি তখন স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি।
এছাড়াও, ছবিটিতে দেখানো হয়েছে যে, শেখ মুজিবুর রহমানই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র নেতা ছিলেন। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আরও অনেক নেতা-কর্মীরই ভূমিকা ছিল।
চলচ্চিত্রি দেখানো হয়েছে শেখ মুজিবর রহমান বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। কিন্তু ইতিহাস বলে তিনি সে সময় এই আন্দোলনের সাথে যুক্তই ছিলেন না। তিনি তখন ছিলেন জেলখানাতে। বরং এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে, ৪৭ এর হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময়ে কলকাতায় তার কর্মকাণ্ড কিংবা স্বাধীনতা পরবর্তী তার শাসনামলে দেশে দুর্ভিক্ষ।
এই ছবিটির প্রচারণা অভিযানও সমালোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন সরকার এ ছবিটির প্রচারণার জন্য সরকারি সম্পদ ব্যবহার করছে। সরকারি সম্পদ ব্যবহারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য এটি ফ্রি দেখানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছে, যেটিকে অনেকেই হিটলারের ফ্রি রেডিওর সাথে তুলনা করছে। পাশপাশি অনেকেই মনে করছেন, আওয়ামী লীগের নেতারা এই চলচ্চিত্র দেখতে সবাইকে বাধ্য করবে এবং তাদের কথা না শুনলে অতীতের মতই নির্যতনের শিকার হতে হবে।